শীতকালীন পরিযায়ী পাখিদের আকর্ষণীয় আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এখানকার লেকগুলো প্রতি বছর হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আসা পরিযায়ী পাখির জন্য একটি প্রিয় গন্তব্য। পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে প্রতিবছর আয়োজন করা হয় ‘পাখিমেলা’, যেখানে পাখিপ্রেমী এবং সংরক্ষণকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান। এবারের মেলায় ক্যাম্পাসের লেকগুলোতে পরিযায়ী পাখি না থাকলেও, মেলা দেখতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষজন পাখির খুনসুটি এবং উড়াউড়ি দেখতে না পেয়ে কিছুটা হতাশ হন।
ঢাকার মিরপুর থেকে মেলায় আসা আফসানা বলেন, “আগেরবার এখানে এসে লেকগুলোতে অনেক পাখি দেখেছিলাম। তারা কী সুন্দর করে উড়তো এবং কিচিরমিচির ডাকতো। কিন্তু এবার পাখি দেখতে না পেয়ে মন খারাপ হয়েছে।”
এবারের মেলায় ‘পাখপাখালি দেশের রত্ন, আসুন সবাই করি যত্ন’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণ। বিগ বার্ড বাংলাদেশ, সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড, কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড, এবং স্পেশাল রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া ছোটদের জন্য পাখি বিষয়ক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কুইজ, বই-পোস্টার প্রদর্শনী, পাখি দেখা ও পাখি চেনার প্রতিযোগিতা এবং পাখি বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “পাখি মেলায় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একত্র হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামো তৈরির ফলে পাখিদের আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার কারণে পরিযায়ী পাখি আগের তুলনায় কম আসছে। তাই আমাদের সকলকে সচেতন হয়ে পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত করতে হবে।”
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, বাংলাদেশ বন বিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, এবং পাখিমেলার আহ্বায়ক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান।