জাতিকে বিভক্ত করে তাদের শাসন করা সহজ হয় বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. মো. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, “ভারত দেশকে বিভিন্নভাবে বিভক্ত করেছে। স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ, সংখ্যাগরিষ্ঠ-সংখ্যালঘু—এইভাবে মানুষকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। তারা ভেবেছিল, তারা দেশের মালিক, আর আমরা ভাড়াটিয়া। কিন্তু বাস্তবতা হলো, দেশের প্রকৃত মালিকেরা এখানেই রয়ে গেছে, আর ভাড়াটিয়ারা পালিয়েছে।”
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) মৌলভীবাজারে জামায়াতে ইসলামীর জেলা শাখা আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতের প্রতি কটাক্ষ
ভারতকে উদ্দেশ করে জামায়াত আমির বলেন, “আমরা চাই, আপনারা শান্তিতে থাকুন এবং আমাদেরও শান্তিতে থাকতে দিন। আমরা আপনাদের ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। তবে আমাদের বিষয়েও অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করুন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলার আগে নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখুন।”
আওয়ামী লীগের সমালোচনা
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগেই হত্যাকাণ্ড শুরু করেছিল। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে তারা এই সহিংসতার সূচনা করে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনী কারচুপির মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় আসে। এরপর পিলখানায় ৫৭ জন দেশপ্রেমিক সেনাকর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। বিডিআর ধ্বংস করে সাড়ে ১৭ হাজার সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয় এবং ৮ হাজার সদস্যকে জেলে পাঠানো হয়। এসবের মধ্যে সাড়ে ৩’শ জন সদস্য জেলখানায় মারা গেছেন।”
ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে বক্তব্য
ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে জামায়াত আমির বলেন, “তিনি বলেছিলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে দুই দিনের মধ্যে ৫ লাখ মানুষ খুন হবে। কিন্তু বাস্তবে এমন কিছুই হয়নি। কারণ, যাদের তিনি দোষারোপ করেছেন, তারা ভালো মানুষ। তাদের দেশ নিয়ে অন্য কোনো স্বার্থ নেই। এই দেশই তাদের একমাত্র ঠিকানা।”
জামায়াত নেতার অভিযোগ
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ জামায়াতকে ধ্বংস করতে চেয়েছে। এরপর তারা বিএনপি, হেফাজত এবং দেশের আলেম-ওলামাদের দমন করেছে। সাংবাদিকদের খুন, গুম এবং নির্যাতন করেছে।”
কর্মী সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় ও সিলেট বিভাগীয় নেতারা বক্তব্য দেন।